মুম্বাইয়ের ট্রাফিক পুলিশের কাছে পাঠানো এক হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় গ্যাংটি জানিয়েছে, যদি সালমান এই অর্থ না দেন, তাহলে তার পরিণতি বাবা সিদ্দিকীর চেয়েও ভয়াবহ হবে।
হুমকির মধ্যে সালমানকে বিষয়টি হালকাভাবে না নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ইন্ডিয়া টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই হুমকির ফলে অভিনেতার নিরাপত্তা নিয়ে নতুন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, এবং পুলিশ ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। সালমানের বান্দ্রার বাড়ির নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।এদিকে, বৃহস্পতিবার মুম্বাই পুলিশ লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। সুখবীর বলবীর সিং (সুখা) নামের ওই ব্যক্তিকে হরিয়ানার পানিপতে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের দাবি, তিনি সালমান খানকে হত্যার একটি ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, সুখা পাকিস্তানের এক ব্যক্তির সঙ্গে সালমানকে খুন করতে পরিকল্পনা করেছিলেন এবং তিনি AK-47, AK-92, এবং M16 রাইফেল পাকিস্তান থেকে এনেছিলেন।
মহারাষ্ট্রের সাবেক মন্ত্রী বাবা সিদ্দিকী খুন হওয়ার পর সালমান নিরাপত্তার আতঙ্কে ভুগছেন, কারণ লরেন্স বিষ্ণোইয়ের দল তাকে নিশানা করেছে। বিষ্ণোই সালমানকে বারবার হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি কয়েক দফা তাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। ১৯৯৮ সালে কৃষ্ণসার হরিণ শিকারের ঘটনায় সালমানের নাম জড়ানোর পর, ২০১১ সালে ‘রেডি’ সিনেমার শুটিংয়ের সময় সালমানকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল লরেন্স বিষ্ণোই। বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের মানুষ কৃষ্ণসার বা চিংকার হরিণকে পবিত্র মনে করে। ২০১৮ সালে সালমানকে হত্যার জন্য বিষ্ণোই তার সহযোগী সম্পত নেহরাকে দায়িত্ব দেন, কিন্তু অস্ত্রের সমস্যার কারণে সে সময় পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি।
এরপর ২০২২ সালে, সকালে হাঁটতে বেরিয়ে সালমানের হাতে একটি হুমকির চিঠি আসে, যাতে তার বাবা সেলিম খানকে হত্যার হুমকি ছিল।
গবেষণায় দেখা যায়, বিষ্ণোই গ্যাংয়ের ১০ জনের ‘খতমের তালিকা’র মধ্যে প্রথমেই রয়েছে সালমানের নাম।
এরপর সালমানের নিরাপত্তা বাড়ানো হয় এবং তাকে ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। কিছু দিন আগে তিনি একটি বুলেটপ্রতিরোধী গাড়িও কিনেছেন।
চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল রাতে, সালমানের বান্দ্রার বাড়ির বাইরে গুলি চালানো হয়, যা লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনে।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, ২৫ লাখ রুপির বিনিময়ে সালমানকে হত্যার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বিষ্ণোই গ্যাংয়ের দ্বারা। গত সপ্তাহে বাবাসিদ্দিকী হত্যার ঘটনায় সালমানের নিরাপত্তা নতুন করে আলোচনায় আসে। লরেন্স বিষ্ণোই বর্তমানে গুজরাটের একটি কারাগারে বন্দি, তবে তার দল মুক্তিপণের জন্য ব্যবসায়ীদের ফোন করে খবরের শিরোনাম হচ্ছে।
বিষ্ণোইয়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী রোহিত গোদারা পূর্বে দাবি করেছিলেন যে, সালমানের যে কোনও বন্ধু তাদের কাছে ‘শত্রু’ হিসেবে গণ্য হয়। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিষ্ণোই চক্রে ৭০০ জনের বেশি বন্দুকবাজ রয়েছে, যারা ভারতজুড়ে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত।