বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট বাংলাদেশের প্রথম যোগাযোগ স্যাটেলাইট, যা ২০১৮ সালের ১২ মে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়। এটি দেশের টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচার খাতে একটি বড় অর্জন। এই স্যাটেলাইটটি তৈরি করা হয়েছিল বাংলাদেশকে ডিজিটাল যুগে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে। এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ও ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের বৈশিষ্ট্য:
- প্রযুক্তি: এটি একটি জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট যা কক্ষপথে নির্দিষ্ট একটি অবস্থানে স্থিত থাকে।
- উৎক্ষেপণ স্থান: এটি ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে SpaceX-এর ফ্যালকন ৯ রকেটের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা হয়।
- অবস্থান: স্যাটেলাইটটি ১১৯.১° পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করছে।
- ব্যান্ড: এতে দুটি ব্যান্ড রয়েছে - কু-ব্যান্ড ও সি-ব্যান্ড।
- জীবনকাল: স্যাটেলাইটটির কার্যক্ষমতা ১৫ বছর।
কাজ ও সুবিধা:
- টেলিভিশন সম্প্রচার: দেশের টিভি চ্যানেলগুলো স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তাদের সম্প্রচার করতে পারে।
- ইন্টারনেট সংযোগ: প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখে।
- ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট: দুর্যোগপূর্ণ সময়ে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য স্যাটেলাইটটি অত্যন্ত কার্যকর।
- সাশ্রয়: বিদেশি স্যাটেলাইটের উপর নির্ভরতা কমিয়ে আনতে এটি সহায়তা করে।
চ্যালেঞ্জসমূহ:
- বাজার প্রতিযোগিতা: আন্তর্জাতিক স্যাটেলাইট বাজারে প্রতিযোগিতা তীব্র।
- আর্থিক লাভ: সঠিকভাবে ব্যবহৃত না হলে এটি লাভজনক নাও হতে পারে।
- পর্যাপ্ত ব্যবহারকারীর অভাব: অনেক প্রতিষ্ঠান এখনও বিদেশি স্যাটেলাইট পরিষেবা ব্যবহার করছে।
সমালোচনা:
বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটকে অনেক সময় "সাদা হাতি" বলা হয়, কারণ:
- প্রকল্পটির ব্যয়বহুল হওয়া সত্ত্বেও এর ব্যবহার যথেষ্ট হয়নি।
- আর্থিকভাবে স্যাটেলাইটটি লাভজনক কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
সম্ভাবনা:
যদি সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয় এবং টেলিকম সেবা থেকে আয় বাড়ানো যায়, তবে এটি বাংলাদেশের জন্য দীর্ঘমেয়াদে একটি বড় অর্জন হতে পারে। এটি দেশের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও গর্বের প্রতীক।
Tags
_bangla news